ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে অঙ্গার হওয়া মা ও মেয়ের মরদেহ দাফন করা হয়েছে একই কবরে। তবে ওই মা ও মেয়ের পরিচয় মেলেনি। এর আগে বরগুনা সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অজ্ঞাত ৩০ জনের গণ-জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বরগুনার পোটকাখালীতে অজ্ঞাতদের দাফন করা হয়। এ সময় ওই মা ও মেয়ের মরদেহও দাফনের জন্য আনা হয়। মা ও মেয়ের মরদেহ বহনকারী কফিনটিতে লেখা ছিল ‘মা ও মেয়ের লাশ’। অজ্ঞাতদের প্রথম কবরটিতেই মা ও মেয়ের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
দাফনে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করা মুসা নামের এক যুবক বলেন, ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এমন করুণ পরিস্থিতি আর দেখিনি। এক কবরে মা ও মেয়েকে দাফন করতে হলো। জীবনে প্রথম এমন এক করুণ ও বিভীষিকাময় সময়ের সাক্ষী হয়ে রইলাম। তিনি বলেন, শুনেছি মা কোলে জড়িয়ে রেখেছেন মেয়েকে। আর সেভাবেই পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মা ও মেয়েকে জড়ানো অবস্থায় মরদেহ দুটি পাওয়া যায়। আমরাও ধারণা করছি যে ওই লাশের কফিনে মা ও শিশু মেয়ের লাশ রাখা। যেহেতু তাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি তাই এক কবরেই দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাওয়া এমডি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, লঞ্চটিতে প্রায় ৪০০ যাত্রী ছিল। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলছেন, নৌযানটিতে যাত্রী ছিলো ৮০০ থেকে এক হাজার জন।