ঢাকা ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে সংক্রমণ, সপ্তাহে ৫৫ হাজার মৃত্যু

  • Golam Faruk
  • প্রকাশিত: ১০:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১
  • 50

করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে বিশ্বের অনেক দেশে আবার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছেছবি: রয়টার্স

গত এক সপ্তাহে সারা বিশ্বে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগের এক সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে শনাক্ত প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে মৃত্যুর হার বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ।

গতকাল বুধবার জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারিসংক্রান্ত সাপ্তাহিক বুলেটিনে বলা হয়, ৫ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত সারা বিশ্বে ২৯ লাখ ৯৬ হাজার ৪৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়, ওই সময় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৫ হাজার ৮৩০ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১১ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বে ১৮ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ৪০ লাখ ২৭ হাজার ৮৬১ জন।

গত সপ্তাহে কোভিড-১৯ শনাক্তের দিক থেকে শীর্ষ দেশের তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে ব্রাজিল (৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩০ জন), ভারত (২ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৯ জন), ইন্দোনেশিয়া (২ লাখ ৪৩ হাজার ১১৯ জন), যুক্তরাজ্য (২ লাখ ১০ হাজার ২৭৭ জন) এবং কলম্বিয়া (১ লাখ ৭৪ হাজার ৩২০ জন)। এর মধ্যে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জগুলোতে শনাক্তের হার খুবই বেশি। এখানে প্রতি ১ লাখ নাগরিকের মধ্যে ২ হাজার ৪৯৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুহার নিম্নগামী, এই সময়ে দেশটিতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশ কমেছে। অপরদিকে পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এই হার বেড়েছে ২৫ শতাংশ, ইউরোপে ২০ শতাংশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৬ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শনাক্ত বেড়েছে ১৫ শতাংশ এবং আফ্রিকায় বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ।

একই সময়ে আফ্রিকায় মৃত্যুহার প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেড়েছে ২৬ শতাংশ। তবে আমেরিকায় মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমছে, যা শতকরা হিসাবে ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বুলেটিন অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবরে ভারতে শনাক্ত হওয়া দ্রুত সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন ডেলটা ধরন বিশ্বের ১১১টি দেশে চিহ্নিত হয়েছে।

এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই টিকার মিশ্র ডোজ কিংবা বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত টিকা অদলবদল না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।

গত সোমবার এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, এটা কিছুটা বিপজ্জনক প্রবণতা। নাগরিকেরা যদি টিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ হিসেবে কোন টিকা কখন নেবেন সেই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে দেশে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কৌশলগত পরামর্শক দল গত জুন মাসে জানায়, করোনার টিকার মিশ্র ডোজ নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। এতে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টিও মূল্যায়ন করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা নেওয়া যাবে, যদি দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া না যায়। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের টিকার মিশ্রকরণ নিয়ে বর্তমানে একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। সম্প্রতি এই ট্রায়ালে মডার্না ও নোভাভ্যাক্সকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিষয় :
প্রতিবেদক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

Golam Faruk

জনপ্রিয়

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে সংক্রমণ, সপ্তাহে ৫৫ হাজার মৃত্যু

প্রকাশিত: ১০:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১

গত এক সপ্তাহে সারা বিশ্বে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগের এক সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে শনাক্ত প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে মৃত্যুর হার বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ।

গতকাল বুধবার জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারিসংক্রান্ত সাপ্তাহিক বুলেটিনে বলা হয়, ৫ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত সারা বিশ্বে ২৯ লাখ ৯৬ হাজার ৪৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়, ওই সময় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৫ হাজার ৮৩০ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১১ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বে ১৮ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ৪০ লাখ ২৭ হাজার ৮৬১ জন।

গত সপ্তাহে কোভিড-১৯ শনাক্তের দিক থেকে শীর্ষ দেশের তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে ব্রাজিল (৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩০ জন), ভারত (২ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৯ জন), ইন্দোনেশিয়া (২ লাখ ৪৩ হাজার ১১৯ জন), যুক্তরাজ্য (২ লাখ ১০ হাজার ২৭৭ জন) এবং কলম্বিয়া (১ লাখ ৭৪ হাজার ৩২০ জন)। এর মধ্যে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জগুলোতে শনাক্তের হার খুবই বেশি। এখানে প্রতি ১ লাখ নাগরিকের মধ্যে ২ হাজার ৪৯৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুহার নিম্নগামী, এই সময়ে দেশটিতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশ কমেছে। অপরদিকে পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এই হার বেড়েছে ২৫ শতাংশ, ইউরোপে ২০ শতাংশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৬ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শনাক্ত বেড়েছে ১৫ শতাংশ এবং আফ্রিকায় বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ।

একই সময়ে আফ্রিকায় মৃত্যুহার প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেড়েছে ২৬ শতাংশ। তবে আমেরিকায় মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমছে, যা শতকরা হিসাবে ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বুলেটিন অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবরে ভারতে শনাক্ত হওয়া দ্রুত সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন ডেলটা ধরন বিশ্বের ১১১টি দেশে চিহ্নিত হয়েছে।

এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই টিকার মিশ্র ডোজ কিংবা বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত টিকা অদলবদল না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।

গত সোমবার এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, এটা কিছুটা বিপজ্জনক প্রবণতা। নাগরিকেরা যদি টিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ হিসেবে কোন টিকা কখন নেবেন সেই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে দেশে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কৌশলগত পরামর্শক দল গত জুন মাসে জানায়, করোনার টিকার মিশ্র ডোজ নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। এতে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টিও মূল্যায়ন করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা নেওয়া যাবে, যদি দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া না যায়। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের টিকার মিশ্রকরণ নিয়ে বর্তমানে একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। সম্প্রতি এই ট্রায়ালে মডার্না ও নোভাভ্যাক্সকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।