ঢাকা ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রী লজ্জার হাত থেকে দেশকে বাঁচান : খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার সুযোগ দিন

  • Golam Faruk
  • প্রকাশিত: ০৯:৪৭:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • 81

।। মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার ।।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে আওয়ামী লৗগ আজকে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কারণ বেগম খালেদা জিয়া এদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি সেদিন তার দুই শিশুর হাত ধরে (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো) মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বারা গ্রেফতার হয়ে তিনি ক্যান্টমেন্টের কারাগারে বন্দি ছিলেন ১৬ ডিসেম্বব পর্যন্ত। আজকে আপনারা তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছেন। এখন তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

৫০ বছরে এরা (সরকার) দাবি করে যে, বাংলাদেশে উন্নয়নের নাকী বন্যা বইয়ে দিয়েছে। এই ৫০ বছরে আজকে গরীর আরো গরীব হয়েছে। এখানে কিছু সংখ্যাক আওয়ামী লীগের সহায়তাপুষ্ট, মদদপুষ্ট কিছু বড়লোক আরো ধনী হয়েছে। কি হয়েছে? আজকে আমাদের দেশের কৃষকেরা তারা তাদের পণ্যের দাম পাচ্ছে না, শ্রমিকেরা তাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা মজুরী পাচ্ছে না। আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করে ফেলেছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করে ফেলেছে, আমাদের অর্থনীতি সত্যিকার অর্থে একটা পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্য হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বিদায় করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প রাস্তা নেই।

আজকে সময় নেই। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি, ব্যক্তি সকলকে সঙ্গে নিয়ে দূর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় যে শক্তি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে তাদেরকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এই সরকার একটি দানবীয় সরকার। আজকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের একটি সংস্থার কর্মকর্তার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার খবর। আজকে সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি কোথাও জায়গা পাচ্ছেন না, তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। এসব কাদের জন্য হচ্ছে? আজকে যারা ক্ষমতায় জোর করে দখল করে আছে তাদের জন্য, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য।

বর্তমানে সবচাইতে বড় খবর বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি। যে যতই বলুন সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। হ্যাঁ, মানবিক কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন সে এক কথা নতুবা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে যদি বাধ্য করতে পারেন বা বাধ্য করেন সেটা ভিন্ন কথা। এ ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসা নিয়ে নানান লুকোচুরি হচ্ছে, নানান জন নানা কথা বলছেন। রাজনীতিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিকরা তার চিকিৎসা নিয়ে কথা বললে প্রশ্ন তো কিছু উঠবেই, তেমন বিশ্বাসযোগ্যতাও পাবে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত ঘণ্টায় ঘণ্টায় বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বুলেটিন বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া, গণমাধ্যমের অফিসগুলোয় পৌঁছে দেওয়া। সেদিন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদের কথা যথাযথ যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা কিছু না বলে বাইরের লোক কথা বললে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তো জাগবেই। তাই এভারকেয়ার হাসপাতালের উচিত সুনির্দিষ্ট মুখপাত্র ঠিক করা, যিনি খালেদা জিয়ার শরীরের অবস্থা ক্ষণে ক্ষণে বলতে পারতেন। তা করা হয়নি। সেজন্যই এত উল্টাপাল্টা। ’ খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এটা থামাতে পারছে না। তাহলে আমাদের দেশে কোটি কোটি মানুষ তারা কোন ভরসায় দেশে চিকিৎসা নেয়? যে সিদ্ধান্তই হোক দ্রুত নেওয়া দরকার। না হলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। সরকারের যেমন কাজ সরকারে টিকে থাকার জন্য চোখ-কান খোলা রাখা, ঠিক তেমনি বিরোধী দলের প্রধান কাজই হচ্ছে যে কোনোভাবে সরকারকে অপ্রিয় করা। বিএনপি তেমন কিছু করতে পারছে না কারণ তারা মানুষের আস্থা হারিয়েছে। সে আস্থা এখনো ফিরে আসেনি। তাই শুধু এখন খালেদা জিয়ার ইস্যু নিয়ে দলীয় কর্মী দিয়ে তারা মাঠ ঘরম করতে চাচ্ছে।

বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আলোচনা, মুরাদের বিদেশ পালানো এবং সেই সঙ্গে র‌্যাব ও অন্যান্য কয়েকজনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আলোচনায় প্রথম দিকে এসেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, ঘুষ, খুন এসবের অজুহাতে আমাদের দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি বড়ই লজ্জার কথা। এ লজ্জা থেকে পরিত্রাণের উপায় সভ্যতার পরিচয় দেওয়া, মানবতার পরিচয় দেওয়া। গলায় ভাঙা কলসি নিয়ে কাঁদলেও কেউ বিশ্বাস করবে না বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি, বাংলাদেশে পুরোপুরি আইনের শাসন আছে ঠিক নয়। তাই এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, এ সময় এ বিধিনিষেধ নিশ্চয়ই রাজনৈতিক হতে পারে। কিন্তু কথাগুলো একেবারে মিথ্যা নয়। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ যাতে দেশের সম্মান ক্ষুন্ন হয় এ রকম কাজ কাউকে করতে দেবেন না। আর কেউ যদি তেমন করে তাকে কঠোর হাতে দমন করুন। মানবিক দিক বিচার করে অনতিবিলম্বে সুচিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিন। খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠালে আপনার বিন্দু পরিমাণ ক্ষতি হবে না আর তাঁকে বিদেশে না পাঠালে আপনার সামান্যতম লাভ হবে না। তাই বিদেশে পাঠানোই যুক্তিযুক্ত। যে যত কথাই বলুক, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাবার মতো বুকের পাটা একমাত্র আপনারই আছে। আর তাঁকে আপনি বিদেশে পাঠালে সমকালে মানবিক বিচারে আপনি শ্রেষ্ঠ স্থানে অবস্থান করবেন এটা কারও মুখের কথায় নষ্ট হবে না।
দেশের কোনো আইনেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য বাধা নেই। এই আইনের বাধা একজনই সেটা হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী নিজেকে দেশের আইন মনে করেন। তিনি যা বলবেন তাই আইন। তিনি চাইলে যে যত বড় হোক না কেনো তাকে শাস্তি পেতে হবে। যত বড় রাজনীতিবিদ হোন না কেনো শাস্তি পেতে হবে। যদিও সে ভালো মানুষ হয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে শাস্তি পেতে হবে।

দেশের গণমাধ্যম বলছে- বেগম খালেদা জিয়ার থেমে থেমে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আর তারা বলছে দেশের ভেতরে চিকিৎসা সম্ভব। তারা কিছুই মনে করেন না। তারা যেটাই বলবে সেটাই বিশ্বাস করতে হবে? তাহলে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা কেনো সিঙ্গাপুরে হলো? কেনো বিমান চার্টার্ড করা হলো? কেনো দেশের চিকিৎসকরা তাকে সারিয়ে তুলতে পারেননি? কেনো সেদিন বলেননি যে কাদেরের চিকিৎসা বাংলাদেশেই হবে? এই ধরনের দ্বিচারিতা ও স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট মনোভাবের জন্য আপনাকে একদিন জবাব দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সম্রাটের মতো, সুলতান বা সুলতানার মতো দেশ চালাচ্ছেন। আর তার মন্ত্রীরা আমিরের মতো চলেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যা বলেন তার আমির উমরারা একই বুলি আওড়াতে থাকে। তিনি যা বলেন তার মন্ত্রীরা আরো বাড়িয়ে বলেন। না হলে আমিরগিরি থাকেনা।

পাকিস্তান, মালদ্বীপ সহ অনেক দেশকেই আমেরিকা তাদের গণতন্ত্র সম্মেলনে ডেকেছে। কিন্তু বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন তিনি নাকি মানুষকে ভাতের অধিকার ও গণতন্ত্র দিয়েছেন। তাহলে আপনাকে ডাকেনি কেনো? এই প্রশ্ন তো সবার মুখে মুখে। কারণ একটাই আপনার গণতন্ত্র প্লাস্টিকের গণতন্ত্র, কচু পাতার উপরে যে পানি থাকে সেই পানির মতো গণতন্ত্র। কচু পাতার মতো টলা দিলেই পানি পড়ে যাবে।

দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞদের কথাবার্তা কিছুই মনে করেন না তারা। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বড় চিকিৎসক মনে করেন। ওবায়দুল কাদের মনে করেন তিনি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সার্জন। আর হাছান মাহমুদ মনে করেন তিনি হলেন গ্যাস্ট্রো এন্ট্রোলজির একজন বিখ্যাত চিকিৎসক। একজন মুমুর্ষু রোগির (খালেদা জিয়) বিষয়ে তার ডাক্তারার সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন। কিন্তু হাছান মাহমুদ তার উল্টোটা বলছেন। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে তথ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি তাচ্ছিল্য করে উত্তর দেন যে, খালেদা জিয়ার পেটে ব্যথা বা হাঁটু ব্যথার উপর নির্ভর করে কি দেশের সূচক তৈরি হবে?

বিনা ভোটে জাতির ঘাড়ে জোর করে চেপে বসাদের কেউ কেউ মাঝে মধ্যেই আপত্তিকর ঢেকুর তুলেন। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে কুরআন-সুন্নাহর আওয়াজ, তাফসীর মাহফিল ও ওয়াজ মাহফিলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। এটি আগুন নিয়ে খেলা করার শামিল। অতীতে এই আগুন নিয়ে খেলা যারাই করেছেন তাদের করুণ পরিণতি থেকে ছবক নেওয়া উচিত।

জেল-জুলুম, মামলা-হামলা এবং ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়েও কুরআন-সুন্নাহর আওয়াজ বন্ধ করা যায়নি আগামীতেও বন্ধ করা যাবে না। ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের সকল অপচেষ্টাকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে ইনশআল্লাহ্‌।

এরা কার্যত দেশকে মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত করতে চায়। তাদের এই ইচ্ছা মহান আল্লাহ্‌ তা’য়ালার ওপর ভরসা করে দেশপ্রেমিক ইসলামপ্রিয় জনগণ ব্যর্থ করে দিবে ইনশাআল্লাহ্‌।

[ লেখকঃ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: বাংলা পোস্ট, প্রাবন্ধিক ও সদস্য ডিইউজে ]

বিষয় :
প্রতিবেদক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

Golam Faruk

জনপ্রিয়

প্রধানমন্ত্রী লজ্জার হাত থেকে দেশকে বাঁচান : খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার সুযোগ দিন

প্রকাশিত: ০৯:৪৭:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

।। মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার ।।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে আওয়ামী লৗগ আজকে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কারণ বেগম খালেদা জিয়া এদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি সেদিন তার দুই শিশুর হাত ধরে (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো) মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বারা গ্রেফতার হয়ে তিনি ক্যান্টমেন্টের কারাগারে বন্দি ছিলেন ১৬ ডিসেম্বব পর্যন্ত। আজকে আপনারা তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছেন। এখন তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

৫০ বছরে এরা (সরকার) দাবি করে যে, বাংলাদেশে উন্নয়নের নাকী বন্যা বইয়ে দিয়েছে। এই ৫০ বছরে আজকে গরীর আরো গরীব হয়েছে। এখানে কিছু সংখ্যাক আওয়ামী লীগের সহায়তাপুষ্ট, মদদপুষ্ট কিছু বড়লোক আরো ধনী হয়েছে। কি হয়েছে? আজকে আমাদের দেশের কৃষকেরা তারা তাদের পণ্যের দাম পাচ্ছে না, শ্রমিকেরা তাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা মজুরী পাচ্ছে না। আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করে ফেলেছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করে ফেলেছে, আমাদের অর্থনীতি সত্যিকার অর্থে একটা পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্য হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বিদায় করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প রাস্তা নেই।

আজকে সময় নেই। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি, ব্যক্তি সকলকে সঙ্গে নিয়ে দূর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় যে শক্তি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে তাদেরকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এই সরকার একটি দানবীয় সরকার। আজকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের একটি সংস্থার কর্মকর্তার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার খবর। আজকে সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি কোথাও জায়গা পাচ্ছেন না, তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। এসব কাদের জন্য হচ্ছে? আজকে যারা ক্ষমতায় জোর করে দখল করে আছে তাদের জন্য, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য।

বর্তমানে সবচাইতে বড় খবর বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি। যে যতই বলুন সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। হ্যাঁ, মানবিক কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন সে এক কথা নতুবা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে যদি বাধ্য করতে পারেন বা বাধ্য করেন সেটা ভিন্ন কথা। এ ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসা নিয়ে নানান লুকোচুরি হচ্ছে, নানান জন নানা কথা বলছেন। রাজনীতিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিকরা তার চিকিৎসা নিয়ে কথা বললে প্রশ্ন তো কিছু উঠবেই, তেমন বিশ্বাসযোগ্যতাও পাবে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত ঘণ্টায় ঘণ্টায় বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বুলেটিন বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া, গণমাধ্যমের অফিসগুলোয় পৌঁছে দেওয়া। সেদিন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদের কথা যথাযথ যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা কিছু না বলে বাইরের লোক কথা বললে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তো জাগবেই। তাই এভারকেয়ার হাসপাতালের উচিত সুনির্দিষ্ট মুখপাত্র ঠিক করা, যিনি খালেদা জিয়ার শরীরের অবস্থা ক্ষণে ক্ষণে বলতে পারতেন। তা করা হয়নি। সেজন্যই এত উল্টাপাল্টা। ’ খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এটা থামাতে পারছে না। তাহলে আমাদের দেশে কোটি কোটি মানুষ তারা কোন ভরসায় দেশে চিকিৎসা নেয়? যে সিদ্ধান্তই হোক দ্রুত নেওয়া দরকার। না হলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। সরকারের যেমন কাজ সরকারে টিকে থাকার জন্য চোখ-কান খোলা রাখা, ঠিক তেমনি বিরোধী দলের প্রধান কাজই হচ্ছে যে কোনোভাবে সরকারকে অপ্রিয় করা। বিএনপি তেমন কিছু করতে পারছে না কারণ তারা মানুষের আস্থা হারিয়েছে। সে আস্থা এখনো ফিরে আসেনি। তাই শুধু এখন খালেদা জিয়ার ইস্যু নিয়ে দলীয় কর্মী দিয়ে তারা মাঠ ঘরম করতে চাচ্ছে।

বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আলোচনা, মুরাদের বিদেশ পালানো এবং সেই সঙ্গে র‌্যাব ও অন্যান্য কয়েকজনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আলোচনায় প্রথম দিকে এসেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, ঘুষ, খুন এসবের অজুহাতে আমাদের দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি বড়ই লজ্জার কথা। এ লজ্জা থেকে পরিত্রাণের উপায় সভ্যতার পরিচয় দেওয়া, মানবতার পরিচয় দেওয়া। গলায় ভাঙা কলসি নিয়ে কাঁদলেও কেউ বিশ্বাস করবে না বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি, বাংলাদেশে পুরোপুরি আইনের শাসন আছে ঠিক নয়। তাই এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, এ সময় এ বিধিনিষেধ নিশ্চয়ই রাজনৈতিক হতে পারে। কিন্তু কথাগুলো একেবারে মিথ্যা নয়। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ যাতে দেশের সম্মান ক্ষুন্ন হয় এ রকম কাজ কাউকে করতে দেবেন না। আর কেউ যদি তেমন করে তাকে কঠোর হাতে দমন করুন। মানবিক দিক বিচার করে অনতিবিলম্বে সুচিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিন। খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠালে আপনার বিন্দু পরিমাণ ক্ষতি হবে না আর তাঁকে বিদেশে না পাঠালে আপনার সামান্যতম লাভ হবে না। তাই বিদেশে পাঠানোই যুক্তিযুক্ত। যে যত কথাই বলুক, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাবার মতো বুকের পাটা একমাত্র আপনারই আছে। আর তাঁকে আপনি বিদেশে পাঠালে সমকালে মানবিক বিচারে আপনি শ্রেষ্ঠ স্থানে অবস্থান করবেন এটা কারও মুখের কথায় নষ্ট হবে না।
দেশের কোনো আইনেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য বাধা নেই। এই আইনের বাধা একজনই সেটা হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী নিজেকে দেশের আইন মনে করেন। তিনি যা বলবেন তাই আইন। তিনি চাইলে যে যত বড় হোক না কেনো তাকে শাস্তি পেতে হবে। যত বড় রাজনীতিবিদ হোন না কেনো শাস্তি পেতে হবে। যদিও সে ভালো মানুষ হয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে শাস্তি পেতে হবে।

দেশের গণমাধ্যম বলছে- বেগম খালেদা জিয়ার থেমে থেমে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আর তারা বলছে দেশের ভেতরে চিকিৎসা সম্ভব। তারা কিছুই মনে করেন না। তারা যেটাই বলবে সেটাই বিশ্বাস করতে হবে? তাহলে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা কেনো সিঙ্গাপুরে হলো? কেনো বিমান চার্টার্ড করা হলো? কেনো দেশের চিকিৎসকরা তাকে সারিয়ে তুলতে পারেননি? কেনো সেদিন বলেননি যে কাদেরের চিকিৎসা বাংলাদেশেই হবে? এই ধরনের দ্বিচারিতা ও স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট মনোভাবের জন্য আপনাকে একদিন জবাব দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সম্রাটের মতো, সুলতান বা সুলতানার মতো দেশ চালাচ্ছেন। আর তার মন্ত্রীরা আমিরের মতো চলেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যা বলেন তার আমির উমরারা একই বুলি আওড়াতে থাকে। তিনি যা বলেন তার মন্ত্রীরা আরো বাড়িয়ে বলেন। না হলে আমিরগিরি থাকেনা।

পাকিস্তান, মালদ্বীপ সহ অনেক দেশকেই আমেরিকা তাদের গণতন্ত্র সম্মেলনে ডেকেছে। কিন্তু বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন তিনি নাকি মানুষকে ভাতের অধিকার ও গণতন্ত্র দিয়েছেন। তাহলে আপনাকে ডাকেনি কেনো? এই প্রশ্ন তো সবার মুখে মুখে। কারণ একটাই আপনার গণতন্ত্র প্লাস্টিকের গণতন্ত্র, কচু পাতার উপরে যে পানি থাকে সেই পানির মতো গণতন্ত্র। কচু পাতার মতো টলা দিলেই পানি পড়ে যাবে।

দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞদের কথাবার্তা কিছুই মনে করেন না তারা। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বড় চিকিৎসক মনে করেন। ওবায়দুল কাদের মনে করেন তিনি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সার্জন। আর হাছান মাহমুদ মনে করেন তিনি হলেন গ্যাস্ট্রো এন্ট্রোলজির একজন বিখ্যাত চিকিৎসক। একজন মুমুর্ষু রোগির (খালেদা জিয়) বিষয়ে তার ডাক্তারার সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন। কিন্তু হাছান মাহমুদ তার উল্টোটা বলছেন। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে তথ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি তাচ্ছিল্য করে উত্তর দেন যে, খালেদা জিয়ার পেটে ব্যথা বা হাঁটু ব্যথার উপর নির্ভর করে কি দেশের সূচক তৈরি হবে?

বিনা ভোটে জাতির ঘাড়ে জোর করে চেপে বসাদের কেউ কেউ মাঝে মধ্যেই আপত্তিকর ঢেকুর তুলেন। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে কুরআন-সুন্নাহর আওয়াজ, তাফসীর মাহফিল ও ওয়াজ মাহফিলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। এটি আগুন নিয়ে খেলা করার শামিল। অতীতে এই আগুন নিয়ে খেলা যারাই করেছেন তাদের করুণ পরিণতি থেকে ছবক নেওয়া উচিত।

জেল-জুলুম, মামলা-হামলা এবং ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়েও কুরআন-সুন্নাহর আওয়াজ বন্ধ করা যায়নি আগামীতেও বন্ধ করা যাবে না। ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের সকল অপচেষ্টাকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে ইনশআল্লাহ্‌।

এরা কার্যত দেশকে মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত করতে চায়। তাদের এই ইচ্ছা মহান আল্লাহ্‌ তা’য়ালার ওপর ভরসা করে দেশপ্রেমিক ইসলামপ্রিয় জনগণ ব্যর্থ করে দিবে ইনশাআল্লাহ্‌।

[ লেখকঃ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: বাংলা পোস্ট, প্রাবন্ধিক ও সদস্য ডিইউজে ]